নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর
প্রিয় পাঠক আপনারা কি নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের আর্টিকেলে নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
নিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে ৫° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে যে জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়, তাকে নিরক্ষীয় জলবায়ু বলে। তবে কোন কোন স্থানে ১০° অক্ষাংশ পর্যন্ত এ জলবায়ু দেখা যায়। আজকের আর্টিকেলে নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।
নিরক্ষীয় জলবায়ুর সংজ্ঞা
নিরক্ষরেখা এবং তার নিকটবর্তী অঞ্চলে অত্যাধিক গরম ও আদ্রর্তার দরুন সারা বছর যে ভ্যাপসা গরম আবহাওয়া অনুভূত হয় তাকে নিরক্ষীয় জলবায়ু বলে।
অবস্থান: সাধারণত নিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে ৫° উত্তর ৫° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে এ জলবায়ু দেখতে পাওয়া যায়। স্থানে স্থানে এটি ১০°অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
মহাদেশীয় অবস্থান: দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান নদীর অববাহিকা, আফ্রিকার কঙ্গো নদীর অববাহিকা ও গিনি উপকূল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ,মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ায় এ জলবায়ু দেখা যায়।
নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য
নিরক্ষীয় অঞ্চলের জলবায়ু প্রধানত নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। সূর্য সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয় বলে দিন-রাত্রি দৈর্ঘ্য প্রায় সমান। জানুয়ারি ও জুলাই মাসের তাপমাত্রার পার্থক্য নেই বললেই চলে। তাই ঋতু পরিবর্তন এ অঞ্চলে দেখা যায় না। সারা বছর অধিক তাপ ও বৃষ্টিপাত এ জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য। সাধারণত বায়ুর তাপ, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি দ্বারা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করা হয়। নিম্নে নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হলো:
১)বায়ুর তাপ
ক)বার্ষিক ও ঋতুগত তাপমাত্রা
নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং দিবাভাগের দৈর্ঘ্য সারা বছর প্রায় একই ধরনের থাকে বলে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা সারা বছরই অধিক থাকে এবং বিভিন্ন মাসের মধ্যে তাপমাত্রার ব্যবধান খুবই কম হয়ে থাকে। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা সাধারণত ২২°সেলসিয়াস থেকে ৩৪°সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ অঞ্চলে বার্ষিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য খুবই কম। স্থলভাগে বার্ষিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য প্রায় ২৫°সেলসিয়াসের কম হয়ে থাকে।তবে জলভাগের দিকে এ পার্থক্য আরও কম।
প্রতিমাসে উষ্ণতা প্রায় একই ধরনের হয়ে থাকে। মেঘাচ্ছন্নতার আধিক্য এবং উদ্ভিজ্জের আচ্ছাদনের জন্য ভূপৃষ্ঠ হতে বিকিরণজনিত তাপ ঊর্ধ্ব বায়ুতে বিস্তার লাভ করতে না পেরে এবং সর্বদা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জন্য বায়ুতে ঘনীয়ভবনের সুপ্ততাপ সংযোজিত হয় বলে প্রচন্ড তাপ অনুভূত হয়।
খ)দৈনিক তাপমাত্রার অবস্থা
নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য হিসেবে বার্ষিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য অপেক্ষা দৈনিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য অনেক বেশি হয়ে থাকে। দৈনিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য সাধারণত ৬.৭°সেলসিয়াস থেকে ১২.২°সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। বেলা দ্বিপ্রহরের পরে সর্বোচ্চ এবং শেষ রাত্রিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখা যায়। কোন কোন সময় রাত্রির তাপমাত্রা ১৫°সেলসিয়াস নেমে যায়। মধ্য অক্ষাংশ অঞ্চলের উচ্চচাপ ও এ অঞ্চলে প্রবেশ করে না বলে দৈনিক তাপের পার্থক্য কমই দেখা যায়। তবে মেঘাচ্ছন্নতার পার্থক্যের দরুনই দৈনিক তাপমাত্রার পার্থক্য হয়ে থাকে।
উপরিউক্ত বর্ণনা থেকে এ অঞ্চলের তাপের তিনটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা:
ক) সারা বছর সমান ভাবে অধিক তাপমাত্রা থাকে,
খ) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপের পার্থক্য সাধারণত কম থাকে,
গ) তাপমাত্রা চরমভাবে স্বল্পতা অনুভব করা যায়,
পৃথিবীর অন্যান্য কয়েকটি অঞ্চলে নিরক্ষীয় অঞ্চল অপেক্ষা অধিক উত্তাপ অনুভূত হয়, কিন্তু নিরক্ষীয় অঞ্চলের মতো সারা বছর অধিক উত্তাপ এবং উত্তাপের পার্থক্য এত কম আর কোথাও দেখা যায় না।
২) বায়ুর চাপ
অত্যাধিক উত্তাপের জন্য এ অঞ্চলে একটি স্থায়ী নিম্নচাপ অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উপক্রান্তীয় উষ্ণ চাপ বলয়গুলো হতে অয়ন বায়ু এ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় এবং এ অঞ্চলে এসে অত্যন্ত উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। সুতরাং এ অঞ্চলে সর্বদা শান্তবলয় অবস্থান করে। নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য হিসেবে,
এ অঞ্চলে অনুভূমিকভাবে তাপমাত্রার পরিবর্তনের হার খুব কম বলে বায়ুচাপের পরিবর্তনের হারও কম। ফলে অনুভূমিকভাবে বায়ুপ্রবাহের বেগও অতি কম। কেবল প্রান্তভাগে অয়ন বায়ুর প্রবেশজনিত কারণে অনুভূমিক বায়ুপ্রবাহের বেগ অপেক্ষাকৃত অধিক হয় এবং নিরক্ষীয় শান্তবলয়ের দিকে বায়ুর বেগ ক্রমশ কমে যায়।অত্যাধিক তাপের জন্য বায়ুতে সর্বদা পরিচলন প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
ফলে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু এখানে এসে উর্ধ্বগামী হয়। এ উর্ধ্বগামী উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু দ্রুত ওপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের জন্য নিরক্ষীয় শান্তবলয় যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণে কিছুটা সরে যায় বলে এ জলবায়ু অঞ্চলের কোন কোন স্থানে শুষ্ক অয়ন বায়ু প্রবেশ করে এবং এখানকার আবহাওয়া কিছুটা আরামদায়ক অনুভূত হয়।
৩)বায়ুপ্রবাহ
নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রে শীতল বায়ু প্রবাহিত হয়। ফলে দিনে প্রচন্ড উত্তাপের সময় সমুদ্রের এ শীতল বায়ু সেখানকার মানুষের জীবন ধারণকে অপেক্ষাকৃত সহজ করে তোলে। সমুদ্রবায়ুর এ প্রভাব উপকূল হতে দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার থেকে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত অনুভূত হয়। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীণ ভূভাগ এর প্রভাব হতে বঞ্চিত থাকে। অভ্যন্তরীণ অঞ্চলের জলবায়ু মোটেই আরামদায়ক নয়,বরং গুমট ও অস্বাস্থ্যকর এবং শক্তিহীনতা ও মানসিক দুর্বলতার সৃষ্টি করে।
৪) বৃষ্টিপাত
নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য হিসেবে এ অঞ্চলে স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগ অধিক হওয়ায় এবং প্রচন্ড উত্তাপ থাকায় সারাদিনই সূর্যের উত্তাপে জল বাষ্পীভূত হয়ে ঊর্ধ্বে উঠতে থাকে এবং উর্ধ্বে প্রসারিত ও শীতল হয়ে অপরাহ্ণে পরিচলন প্রক্রিয়ায় ব্যাপকভাবে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
পরিচলন প্রক্রিয়ার প্রভাবে নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বদা স্তূপ বা পুঞ্জ মেঘের সঞ্চার হয়। শেষ রাত্রে এবং সকালের দিকে মেঘের আবরণ কম থাকে। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং আকাশে ক্রমশ মেঘ জমতে থাকে। দুপুরের পরে মেঘের আচ্ছাদন এবং আকার, আয়তন ও গভীরতা সর্বাধিক মাত্রায় উপনীত হয়। উত্তাপের পরিমাণ অপরাহ্ণে সর্বাধিক হয় বলে প্রত্যহ বিকাল ৪ বা ৫ ঘটিকার সময় আকাশ ঘন মেঘে আচ্ছন্ন হয় এবং ঝড় বিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টিপাত হয়।
পাশাপাশি কতিপয় বজ্রঝড় একসাথে সংঘটিত হওয়া নিরক্ষীয় অঞ্চলের একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমি ও বায়ুর উত্তাপ হ্রাস পেলে বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যায় এবং মেঘের আবরণ কমে যায়। তবে এ বৃষ্টিপাত দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় প্রত্যহ ঝড়-বৃষ্টির পর মেঘমুক্ত নির্মল আকাশ দেখতে পাওয়া যায়। তবে এই ঝড়-বৃষ্টি কোন কোন সময় সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
নিরক্ষীয় অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৭০ সেন্টিমিটার থেকে ২৫০ সেন্টিমিটারের মত। প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টিপাত হয় বলে এ অঞ্চলে শুষ্ক ঋতু বলে কোন ঋতু নেই। অত্যধিক প্রতিকূল অবস্থাসম্পন্ন অঞ্চলেও বার্ষিক ১২৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।স্থান বিশেষে ৫০০সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অনুষ্ঠিত হলেও স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ সেন্টিমিটার।
ক)বৃষ্টিপাতের ঋতুগত পরিবর্তন
এ অঞ্চলে সারা বছর বৃষ্টিপাত সংঘটিত হলেও কোন কোন সময় বৃষ্টিপাতের হ্রাস বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সাথে সাথে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ও যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণে স্থানান্তরিত হয়। নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের স্থানান্তরণের সাথে সাথে বর্ষণ বলয়ও স্থান পরিবর্তন করে। সূর্য যখন নিরক্ষরেখার ঠিক ওপরে অবস্থান করে তখন নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়।
আবার সূর্য যখন ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থান করে তখন নিরক্ষীয় অঞ্চলে বর্ষণের মাত্রা অপেক্ষাকৃত কমে যায়। এ কারণে নিরক্ষরেখায় বছরে দুইবার (২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর যখন সূর্য নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এ দুই সময় এ অঞ্চলে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পতিত হওয়ায় অত্যধিক তাপে বাষ্পীভবনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ব্যাপকভাবে বৃষ্টিপাত হয়।
আবার সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সময় নিরক্ষরেখায় কম বৃষ্টিবহুল ঋতু দেখা যায়। নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের প্রান্তভাগেও বৃষ্টিপাতের পার্থক্য হয়ে থাকে। সূর্যের উত্তরায়ণের সময় এ অঞ্চলের দক্ষিণ প্রান্তে এবং দক্ষিণায়নের সময় উত্তর প্রান্তে স্বল্পস্থায়ী অপেক্ষাকৃত শুষ্ক ঋতু দেখা যায়। তাই নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের যে সামান্য বৈচিত্র্য দেখা যায় তা হল সারা বছরের বৃষ্টিপাতের মধ্যে সামান্যতম হ্রাস বৃদ্ধি।
শেষ কথা: নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য
নিরক্ষরেখার উভয় পাশে ৫°অক্ষাংশের মধ্যে নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল বিস্তৃত। এখানকার গড় তাপমাত্রা ২২°থেকে ৩৪°সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়। নিরক্ষীয় জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য এ অঞ্চলে বার্ষিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার পার্থক্য খুবই কম।এখানে সারা বছর গ্রীষ্মকাল থাকে।প্রচুর জলীয়বাষ্পপূর্ণ ঊর্ধ্বগামী বায়ুর দ্বারা সারা বছরই এ অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়। এ অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৭০থেকে ২৫০সেন্টিমিটার।প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হয় বলে এ অঞ্চলে শুষ্ক ঋতু বলে কোন ঋতু নেই।দক্ষিণ আমেরিকায় আমাজান নদীর অববাহিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে,আফ্রিকার কঙ্গো নদীর অববাহিকায় ও গিনি উপকূলে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফিলিপাই দ্বীপপুঞ্জ,মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ায় এরূপ জলবায়ু দেখা যায়। আজকের আর্টিকেলে নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।