জলবায়ুর উপাদান গুলো কি কি বর্ণনা কর
প্রিয় পাঠক আপনারা কি জলবায়ুর উপাদান গুলো কি কি জানতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের আর্টিকেলে জলবায়ুর উপাদান গুলো কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান আবার কতিপয় নিয়ামক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। নিয়ামক গুলো ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে জলবায়ুর উপাদান গুলো কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল।
জলবায়ু
পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে কোন স্থানের বায়ুতাপ,বায়ুর চাপ,বায়ু প্রবাহ,বায়ুর আদ্রতা, বারিপাত ইত্যাদির ৩০ থেকে ৪০ বছরের গড় অবস্থাকে সেই স্থানের জলবায়ু বলে।মোটকথা আবহাওয়ার দীর্ঘদিনের গড় অবস্থায় জলবায়ু।
আবহাওয়ার ন্যায় জলবায়ুরও প্রধান উপাদান হচ্ছে বায়ুর তাপ,বায়ুর চাপ,বায়ুপ্রবাহ,বায়ুর আদ্রতা,বৃষ্টিপাত ইত্যাদি। তবে এসব নিয়ন্ত্রণ করে অক্ষাংশ,ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা,সমুদ্র হতে দূরত্ব,বায়ু প্রবাহের দিক,সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি। আবহাওয়ার উপাদান সমূহ ও এদের নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামক সমূহ পরিবর্তনের সাথে সাথে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন হয়।
জলবায়ুর উপাদান গুলো কি কি বর্ণিত হল
যেসব উপাদানের গড় অবস্থা বিচার করে আবহাওয়া ও জলবায়ুর নির্ধারণ করা হয় সেগুলোকেই আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান বলা হয়। আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান একই প্রকার। আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হল: বায়ুর তাপ,বায়ুর চাপ,বায়ুর আর্দ্রতা,মেঘাচ্ছন্নতা,বৃষ্টিপাত প্রভৃতি।জলবায়ুর উপাদান গুলো নিম্নে বর্ণিত হলো:
সূর্যালোক
সূর্যালোক আবহাওয়া ও জলবায়ুর নিয়ন্ত্রণকারী অন্যতম প্রধান উপাদান। কোন স্থানের তাপমাত্রা সেখানকার দৈনিক সূর্যলোক প্রাপ্তির সময়ের উপর নির্ভরশীল।আর তাপমাত্রা আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যান্য বিষয় সমূহ নিয়ন্ত্রণ করে। সূর্যের আলোর ওপর নির্ভর করে কোন স্থানের নির্দিষ্ট দিন বা সময়ের আবহাওয়াকে উজ্জ্বল রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়া,মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া, ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
তাপমাত্রা
তাপমাত্রা জলবায়ুর মুখ্য উপাদান। কোন স্থানের দৈনিক তাপমাত্রা, দিবারাত্রির তাপমাত্রার পার্থক্য, বাৎসরিক ও ঋতুভিত্তিক তাপমাত্রা ইত্যাদির উপর সে স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রকৃতি নির্ধারিত হয়। মরুভূমি ও তুন্দ্রা কিংবা নিরক্ষীয় ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল ভিন্ন তাপমাত্রার বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়।
বায়ুপ্রবাহ
বায়ু প্রবাহ কোন স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। উষ্ণ মণ্ডলীয় স্থলজ বায়ুপ্রবাহ উষ্ণতা এবং মেরু প্রবাহ শৈত্য আনায়ন করে। সমুদ্র ভাগ হতে প্রবাহিত বায়ুতে ভারী বর্ষণ সংঘটিত হয়। বাংলাদেশে মৌসুমী বায়ুর প্রবাহের কারণে চরম আর্দ্র অবস্থা বিরাজ করে। সাংবাৎসরিক আয়ন বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে শুষ্ক অথবা মরু জলবায়ু দৃশ্যমান হয়।
বায়ুর চাপ
কোন স্থানে উচ্চচাপ সৃষ্টি হলে বায়ু বহিঃর্গামী হয় এবং শৈত্য ও শুষ্কতা বিরাজ করে। অপরদিকে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে বায়ু কেন্দ্রগামী হয় এবং ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিপাত সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন কালবৈশাখী স্থলজ নিম্নচাপের ফল। নিরক্ষীয় অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নিম্নচাপ বিরাজ করায় প্রতিদিন বিকালে বজ্র,বিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়।
আদ্রর্তা ও মেঘাচ্ছন্নতা
আদ্রর্তা হলো বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যা উষ্ণ বা বাষ্পীভবনের মাত্রা দ্বারা নির্ধারিত হয়। বায়ুতে জলীয় বাষ্প না থাকলে শুষ্ক আবহাওয়া এবং জলীয়বাষ্প থাকলে আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করে।আর্দ্রতার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে মেঘাচ্ছন্ন অবস্থা বিরাজ করে।
বারিপাত বা অধঃক্ষেপন
বারিপাত বলতে ঘনীভূত বাষ্পের পতনকে বোঝায় যা বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, শিলা বৃষ্টি, শিশির, তুহিন ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ জলীয়বাষ্প ঘনীয়ভবনের পর যে কোন রূপে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তা বারিপাত বা অধঃক্ষেপন হিসেবে পরিগণিত হয়। বারিপাত বা অধঃক্ষেপন আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়। কোন স্থানের দৈনিক ও বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাত বা তুষারপাত ঐ স্থানের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য নির্দেশক।
শেষকথা:
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে জলবায়ুর উপাদান গুলো অতিগুরুত্বপূর্ণ।উপরক্ত জলবায়ুর উপাদান গুলো ছাড়াও কতিপয় উপাদান রয়েছে। জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান ও নিয়ামক এর কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রার তারতম্যতা দেখা যায়। আজকের আর্টিকেলে জলবায়ু উপাদান গুলো কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।