আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

প্রিয় পাঠক আপনারা কি আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য কি জানতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের আর্টিকেলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য কতটা সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকমের জলবায়ু দেখা যায়। আবহাওয়া ও জলবায়ুর মৌলিক উপাদানই এ বিভিন্নতার কারণ। আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য নিম্নে বর্ণিত হল।

আবহাওয়া

কোন স্থানের বায়ুর তাপ,চাপ,আর্দ্রতা,বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি উপাদানের দৈনন্দিন গড় অবস্থাকে আবহাওয়া বলে। আবহাওয়া সর্বদা পরিবর্তন ঘটে। প্রতি মিনিটে বা প্রতি ঘন্টায় এদের পরিবর্তন হয়। কারণ বায়ুর তাপ,বায়ুর চাপ,বায়ু প্রবাহ,বায়ুর আর্দ্রতা,মেঘাচ্ছন্নতা,বারিপাত ইত্যাদি সর্বদা একই রূপ থাকে না।

এ জন্য প্রত্যেক দেশের বড় বড় শহর ও বন্দরে বায়ুর তাপ,বায়ুর চাপ,বায়ুপ্রবাহ,বায়ুর আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি নিরূপণ করার জন্য আবহাওয়া অফিস আছে। দেশের বিভিন্ন অংশের আবহাওয়া অফিস হতে দেশের প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রে,সর্বদা আবহাওয়ার অবস্থা জানানো হয়। ফলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন্দ্র হতে অতি সহজেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস বেতার,টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচার করা সম্ভব হয়।

জলবায়ু

পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে কোন স্থানের বায়ুতাপ,বায়ুর চাপ,বায়ু প্রবাহ,বায়ুর আদ্রতা, বারিপাত ইত্যাদির ৩০ থেকে ৪০ বছরের গড় অবস্থাকে সেই স্থানের জলবায়ু বলে।মোটকথা আবহাওয়ার দীর্ঘদিনের গড় অবস্থায় জলবায়ু।

আবহাওয়ার ন্যায় জলবায়ুরও প্রধান উপাদান হচ্ছে বায়ুর তাপ,বায়ুর চাপ,বায়ুপ্রবাহ,বায়ুর আদ্রতা,বৃষ্টিপাত ইত্যাদি। তবে এসব নিয়ন্ত্রণ করে অক্ষাংশ,ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা,সমুদ্র হতে দূরত্ব,বায়ু প্রবাহের দিক,সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি। আবহাওয়ার উপাদান সমূহ ও এদের নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামক সমূহ পরিবর্তনের সাথে সাথে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন হয়।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য কি

                          আবহাওয়া

                      জলবায়ু

 ১) কোন স্থানের বায়ুমন্ডলের স্বল্পকালীন অবস্থাকে আবহাওয়া বলে।

 ১) কোন স্থানের আবহাওয়ার দীর্ঘ দিনের গড় অবস্থাকে জলবায়ু বলে।

 ২) আবহাওয়ার উপাদান হল: বায়ুর তাপ, বায়ুর চাপ,বায়ুপ্রবাহ,বায়ুর আদ্রর্তা,অধঃক্ষেপন,বারিপাত ইত্যাদি।

২) জলবায়ুর উপাদান একই প্রকার যেমন:বায়ুর তাপ,বায়ুর চাপ,বায়ুপ্রবাহ,বায়ুর আদ্রর্তা,বারিপাত ইত্যাদি। 

 ৩) আবহাওয়া একটি ক্ষুদ্র এলাকার বায়ুমন্ডলের ক্ষণস্থায়ী অবস্থা।

 ৩) জলবায়ু হল দীর্ঘ এলাকার অর্থাৎ কোন দেশ বা মহাদেশের বায়ুমন্ডলের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা।

 ৪) আবহাওয়া নিয়ত পরিবর্তনশীল।প্রতিদিন এমনকি প্রতি ঘন্টায় পরিবর্তিত হতে পারে।

৪) জলবায়ু নিয়ত পরিবর্তনশীল নয়। 

 ৫) আবহাওয়া পর্যালোচনার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। এর জন্য ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন হয় না।

 ৫) জলবায়ুর নির্ধারণের জন্য ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন হয়।

 ৬) প্রতি ঘন্টা বা প্রতিদিনের আবহাওয়া পর্যালোচনা করে আবহাওয়ার গড় বের করা হয়।

৬) কমপক্ষে কোন স্থানের ৩০ থেকে ৪০ বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থাকে জলবায়ু বলে।

৭) আবহাওয়া একটি ক্ষুদ্র স্থানের সাথে সম্পর্কিত।

৭) জলবায়ু বৃহৎ অঞ্চলের সাথে  সম্পর্কিত।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url