শীতে ত্বকের যত্ন-শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

শীতে আপনি কি ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের আর্টিকেলে শীতে ত্বকের যত্ন-শীতে প্রাকৃতিক উপায় ত্বকের যত্ন, শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করব।

শীতে ত্বকের যত্ন-শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

আজকের আর্টিকেলে শীতে ত্বকের যত্ন-শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন, শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।সুতরাং আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার অনুরোধ রইলো।

ভূমিকা

এখন চলছে শীতের মৌসুম। শীতের হিম হিম ঠান্ডা হাওয়ায় ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক,রুক্ষ এবং টানটান। শীতের দাপটের বাতাসে ধুলাবালি,সর্দি,কাশি এবং শীতের পোশাকের টালমাটাল সময়ে এবং ব্যাস্ত জীবনের নানান কারণে ত্বকের দিকে আমাদের খুব একটা খেয়াল রাখা হয় না। কিন্তু শীতের সময় আমরা যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করি সে ক্ষেত্রে আমাদের ত্বক হয়ে উঠবে সুন্দর, মসৃণ এবং উজ্জ্বল।

শীতে ত্বকের যত্ন

শীতে বাতাসের আদ্রতা খুব কম থাকার কারণে ত্বক খুব সহজেই রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে ওঠে। এ সময় শরীরের ভেতর থেকে আদ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি বাহ্যিক ত্বকের উপরেও নিতে হয় কিছু যত্ন। অনেক সময় দেখা যায় ত্বকের বাহিরে যত্ন না নিলে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। শীতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হলো:
  • শীতকালে আমরা অনেকে খুব গরম পানি দিয়ে গোসল করে থাকি। আবার অনেকে অনেকক্ষণ ধরে গোসল করে থাকি। এটা কখনো করা যাবে না।শীতকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। তাহলে ত্বক ভালো থাকবে। অতিরিক্ত গরম পানি মুখের ত্বকের ফলিকল গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলিকল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য কর।
  • শীতে ত্বকের যত্ন নিতে আমরা গোসলের সময় যে ছোপ বা সাবান ব্যবহার করে থাকি সেটা ব্যবহার করা যাবে না। শীতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার যুক্ত সাবান ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও আপনারা ত্বকের ধরন অনুযায়ী সাবান নির্বাচনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
  • শীতে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করতে হবে। ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখার জন্য গোসলের পরে পুরো শরীরের লোশন বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের নিঃসৃত তেল সংরক্ষণে সহায়তা করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে।
  • শীতকালে আমরা অনেকেই উলের বা লাইলনের সোয়েটার পড়ি। এগুলো স্কিনের র‌্যাশ হয় বা রিঅ্যাকশন হয়। এগুলো যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে নিচে অবশ্যই সুতি কাপড় ব্যবহার করতে হবে যাতে সরাসরি স্কিনের সাথে লেগে না থাকে।
  • সূর্য রশ্মি ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হিসেবে ধরা হয়। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত সূর্যের আলো ভিটামিন ডি তৈরির উপযুক্ত সময়। চিকিৎসকদের মতে শীতকালে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকা উচিত।তাহলে শরীরের ৮০ ভাগ ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ হয় এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়।
  • শীতের রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই মুখে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করবেন। এটা ব্যবহার করলে আপনার ত্বক কোমল,উজ্জ্বল ও সতেজ থাকবে এবং ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।সুতরাং শীতে ত্বকের যত্ন হিসেবে ময়েশ্চারাইজার অতি গুরুত্বপূর্ণ।
  • শীতে ত্বকের যত্ন হিসেবে হাত পায়ের যত্ন নেওয়া জরুরী। এজন্য হাত পায়ের আদ্রতা ধরে রাখতে ভালো মানের ক্রিম,লোশন বা জেল ব্যবহার করতে পারেন।
  • শীতকালে যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা বেড়ে যায়। এছাড়াও একজিমা,সোরিয়াসিস,ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগছেন তারা হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। হিউমিডিফায়ার ঘরের জলীয় বাষ্পের অনুপাত ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • শীতে ত্বকের যত্ন নিতে বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
  • শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ত্বককে সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির খাবার

শীতের মৌসুম শুরু হলেই শুরু হয়ে যায় ত্বকের নানান রকম সমস্যা। এ সময় দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও সুষম খাবার রাখা অতি জরুরি। শীতে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে যেসব খাবার খাওয়া অতি জরুরী নিম্নে সেগুলো বর্ণিত হল:

পর্যাপ্ত পানি পান

শীতকালে বাতাসের আদ্রতা অনেক কম থাকে। বাতাসের আদ্রতা কম থাকার কারণে ত্বক খুব সহজেই রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে ওঠে। আবার দেখা যায় শীতকালে অধিকাংশ মানুষই পানি খুব কম খায় এজন্য সহজেই ত্বক শুষ্ক রুক্ষ হয়ে ওঠে।শীতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করলে ত্বকের কোষে পানি পৌঁছায় এবং ত্বক সজীব,কোমল ও উজ্জ্বল দেখায়।

নিয়মিত ব্যায়াম

শীতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রতিদিন ব্যায়াম করা উচিত। চিকিৎসকরাহ নিয়মিত ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

নারকেল

শীতে ত্বকের যত্ন করতে আমরা নারকেল গ্রহণ এবং ব্যবহার করতে পারি। ত্বকের আদ্রতা বাড়াতে নারকেলের জুড়ি নেই। নারকেলে থাকা ফ্যাট ভেতর থেকে ত্বকের আদ্রতা বাড়ায়। এছাড়াও নারকেলে আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। নারকেলে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি ফাঙ্গাল ত্বককে ব্রণের হাত থেকে রক্ষা করে। নারকেলের তৈরি বাটার ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।

জলপাই

শীতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে জলপাই খাওয়া অনেক উপকারী। জলপাইতে থাকা ফ্যাট ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে এবং ত্বকের বয়স বাড়তে দেয় না। জলপাই তে থাকা ভিটামিন ই ত্বককে শুষ্ক হতে দেয় না। এছাড়াও জলপাইতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ফাইবার,প্রোটিন প্রভৃতি যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে। শীতের সময় জলপাইয়ের তেল অর্থাৎ অলিভ অয়েল লাগালেও ত্বকের অনেক উপকার হয়।

কমলা

শীতে ত্বকের যত্ন করতে কমলা খাওয়া অতি জরুরী। কমলার শীতের অন্যতম প্রধান ফল। কমলাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যেমন:ভিটামিন সি,অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল। এই সব পুষ্টি উপাদান ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে করে মসৃণ কোমল ও উজ্জ্বল।

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডো একটি বিদেশি ফল। বর্তমানে বাংলাদেশে ও পাওয়া যাচ্ছে এই ফল। অ্যাভোকাডোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যেমন: ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম,ভিটামিন বি,ভিটামিন ই,ভিটামিন সি,প্রোটিন প্রভৃতি। শীতে ত্বকের যত্ন হিসেবে অ্যাভোকাডো খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বক হয়ে উঠবে কমল,মসৃণ ও সজীব। আবার অ্যাভোকাডোর ফেসপ্যাক মুখের জন্য বেশ উপকারী।

গাজর

গাজর অত্যন্ত সুস্বাদু পুষ্টিকর এবং খাদ্যআশ সমৃদ্ধ শীতকালীন একটি সবজি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সৌন্দর্য চর্চায় বহুদিন থেকে গাজর ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ,ভিটামিন সি, ভিটামিন ই,উচ্চমানের বিটা ক্যারোটিন,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে।


এই সব পুষ্টি উপাদান মুখের বলিরেখা,দাগ,ছোপ ও পিগমেন্টেশন প্রতিরোধ করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও গাজর ত্বকের টিস্যু মেরামত করে এবং ক্ষতিকর সূর্য রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সহায়তা করে। সুতরাং শীতে ত্বকের যত্ন হিসেবে প্রতিদিন অন্তত একটি করে গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

টমেটো

শীতকালে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও তারুণ্য ধরে রাখতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে টমেটো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। টমেটোতে লাইসোপিন নামক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের বিভিন্ন দাগ,বলিরেখা ও শুষ্ক ভাব দূর করে ত্বককে মসৃণ করে।

এছাড়াও টমেটোতে ভিটামিন সি,ভিটামিন এ,পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ফসফরাস রয়েছে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে দারুন কাজ করে। টমেটোতে রয়েছে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের গুণ। সুতরাং শীতে ত্বকের যত্ন হিসেবে টমেটো অনেক উপকারী।

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল করে। মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্তোসায়ানিক নামক উপাদান থাকে যা ত্বকের দাগ,ছোপ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে। শীতে ত্বকের যত্ন করতে মিষ্টি আলু খেতে পারেন। এছাড়াও শীতে নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে সর্দি-কাশি জনিত সমস্যা কমে যায়।

শাকসবজি

শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কম থাকে এজন্য ত্বক সহজে শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে ওঠে। শীতকালে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ শাকসবজিতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। শীতকালে নিয়মিত শাকসবজি খেলে চামড়া মসৃণ ও উজ্জ্বল হয় এবং ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়তে দেয় না।

বাদাম ও বীজ

বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের বীজ ত্বকের আদ্রতা রক্ষা করে। বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের বীজে থাকে কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন,ক্যালসিয়াম,আয়রন,ভিটামিন বি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২,ভিটামিন ই, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড প্রভৃতি। এছাড়া বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের বীজে থাকা খনিজ ত্বকের কোষ গুলো উজ্জীবিত করে।

ডিম

ডিম একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। ডিমের পুষ্টিগুণ রয়েছে অধিক পরিমাণ। এজন্য ডিমকে সুপারফুড নামে অভিহিত করা হয়। ডিমে থাকা ভিটামিন ই,ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ও প্রোটিন ত্বকের উজ্জ্বলতা,সজীবতা কোমলতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বকের দাগ,ছোপ,কালচে ভাব দূর করে। বর্তমানে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা শীতকালে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত একটি করে ডিম রাখার পরামর্শ দেন।

দুধ

দুধ পুষ্টিগুণে ভরপুর। পুষ্টিতে ভরপুর দুধ সবার জন্য অতি দরকারি একটি খাবার। সব ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে বলে দুধকে আদর্শ খাবার বলা হয়ে থাকে। শীতকালে ত্বকের উজ্জ্বলতা, সজীবতা ও তারুণ্য এবং লাবণ্যময় করতে চাইলে প্রতিদিন রাত্রে অন্তত এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেতে পারেন।

টক দই

শীতে ত্বকের যত্ন করতে টক দই খেতে পারেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য টক দইয়ের ভূমিকা অপরিসীম। নিয়মিত টক দই খেলে ত্বক উজ্জ্বল,লাবণ্যময়,সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। কারণ টক দইয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের প্রোবায়োটিক্স এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যা হজমের সাহায্য করে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

শীতে ত্বকের জন্য চাই বাড়তি যত্ন তাহলে ত্বক থাকবে কোমল,মসৃণ,উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। শীতে ত্বকের মৃত কোষ বাড়ে। শীতে প্রাকৃতিক উপায় ত্বকের যত্ন করার মাধ্যমে ত্বকের মৃত কোষ দূর করা সম্ভব। প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্নের কিছু টিপস দেওয়া হলো:

মধু ও পাকা কলা

মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা ত্বকের ব্রণ,কালো দাগ,ছোপ দূর করে এবং ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।মধু ও পাকা কলা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। মধু ও পাকা কলার মিশ্রণটি ২০ থেকে ২৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন।

পরবর্তীতে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে উঠবে নরম,কোমল,উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।শীতে ত্বকের যত্ন করতে মধু ও পাকা কলা বেশ উপকারী

কমলালেবুর রস

কমলালেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। কমলালেবুর রসের সঙ্গে ময়দা বা বেসন এবং মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি ২০ থেকে ৩০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। পরবর্তীতে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বকের মরা কোষ রোধ করে এবং ত্বককে করে নরম,মসৃণ ও উজ্জ্বল।

গ্রিন টির টোনার

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন করতে গ্রীন টির টোনার বেশ উপকারী। গ্রিন টির টোনার ত্বকের অসময়ে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে এবং ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। একটি গ্রিন টির প্যাক ১ থেকে ২ কাপ কুসুম গরম পানিতে ১০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পানি ছেঁকে নিন। প্রতিদিন এই টোনার টি ব্যবহার করলে আপনার ত্বককে সারা দিনের জন্য কোমল ও সতেজ রাখবে।

বাটার মিল্ক প্যাক

শীতে ত্বকের যত্ন করতে বাটার মিল্ক প্যাক বেশ উপকারী। ত্বকের কোমলতা ও লাবণ্যতা ধরে রাখতে বাটার মিল্ক প্যাক প্রতিদিন ব্যবহার করা উচিত। বাটার মিল্কের সঙ্গে এক চিমটা হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করুন।১০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন করতে অতি প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ প্রাকৃতিক এন্টি বায়োটিক হিসেবে কাজ করে। নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের সাথে মধু, কাঁচা দুধ, এবং বেসন ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।এরপর এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত।

পরবর্তীতে হালকা কুসুম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন এরপর ত্বকে একটি ভালো মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এভাবে প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল, কমল ও সজীব।

সিদ্ধ ভাত

ভাত ত্বকের যত্নে খুব কার্যকরী একটি উপাদান। ভাত বয়সের ছাপ দূর করে,ত্বক টানটান করে এবং ত্বকের কুঁচকানো ভাব দূর করতে সাহায্য করে। কোরিয়ানরা তাদের ত্বকের যত্নের প্রধান উপাদান হিসেবে ভাত ব্যবহার করে থাকে। ভাতের সঙ্গে কাঁচা দুধ এবং গোলাপ জল মিশিয়ে নিন এবং একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

পরবর্তীতে নরমাল পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করতে হবে। এই প্যাকটি প্রথমবার ব্যবহারে আপনার ত্বকের পরিবর্তন টা দেখতে পাবেন। শীতে ত্বকের যত্ন করতে প্রাকৃতিক উপায়ে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে পারবেন।

পাকা পেঁপে

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন করতে পাকা পেঁপে অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। কয়েক টুকরো পাকা পেঁপের সঙ্গে ১টেবিল চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার মুখে ভালো করে লাগিয়ে রাখুন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর নরমাল পানিতে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার এই মিশ্রণটির ব্যবহার করুন তাহলে ত্বক শুষ্ক হবে না এবং ত্বকের আদ্রতা ও মসৃণতা ফিরে আসবে।

অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েল বা জলপাই তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ,ভিটামিন ই এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে সতেজ রাখে ও ময়েশ্চারাইজার করে। শীতে ত্বকের যত্ন করতে প্রতিদিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। অলিভ অয়েল ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে,যার ফলে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায় না।

নারিকেল তেল

শীতে বাতাসের আদ্রতা কম থাকে বলে ত্বক সহজে শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে ওঠে। শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকে লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। শীতে যদি নারকেল তেল ম্যাসাজ করা যায় তাহলে ময়শ্চারাইজার লাগানোর প্রয়োজন হয় না।

দুধ ও বেসনের প্যাক

দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল যা ত্বককে সহজে সতেজ করে তোলে। এছাড়াও ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং বয়সের ছাপ কমাতে ও ত্বককে পরিষ্কার করতে বেসনের জুড়ি নেই। শীতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে দুধ ও বেসনের প্যাকটি সপ্তাহে অন্তত দুইবার ব্যবহার করুন।

শেষ কথা: শীতে ত্বকের যত্ন-শীতে প্রাকৃতিক উপায় ত্বকের যত্ন

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পারবেন। আজকের আর্টিকেলে শীতে ত্বকের যত্ন-শীতে প্রাকৃতিক উপায় ত্বকের যত্ন, শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে অনেক উপকৃত হবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url