রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ

প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকে হয়তো এখনো রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ সম্পর্কে জানেন না। তাই এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব রবিউল আউয়াল মাসের বিভিন্ন নফল ইবাদাত সম্পর্কে। নফল ইবাদতের দিক থেকে এই মাস অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই মাসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেন আবার মৃত্যুবরণ করেন। এ জন্য রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ এর দিক থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।

রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ

সারা দুনিয়ার মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনে নফল ইবাদত , তাসবীহ,তাহলীল,কোরআন খতম ও দরুদ শরীফ পাঠ করে তার সওয়াব নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র রুহু মোবারকের ওপর বখসিশ করে থাকে।
তাই সম্পূর্ণ পোষ্টি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ সম্পর্কে।

পেইজ কনটেন্ট সূচিপত্রঃ

  • ভূমিকা
  • রবিউল আউয়াল মাসের নফল নামাজ
  • রবিউল আউয়াল মাসের নফল রোজা
  • শেষকথা

ভূমিকা

আরবী বসরের তৃতীয় মাসের নাম রবিউল আওয়াল। এ মাসটি বারটি মাসের মধ্যে ফযীলতের দিক থেকে উর্দ্ধে এবং এ মাসের মরতবা সর্বাপেক্ষা বেশী।

কারন আল্লাহ পাকের সৃষ্টি সেরা আঠার হাজার মাখলুকাত সৃষ্টির উসিলা ,মহান আল্লাহ পাকের সর্বাধিক প্রিয় সর্বশ্রেষ্ঠ মানব,দুজাহানের সর্দার হযরত মুহাম্মদ ( সা ) এ মাসের বার তারিখে এ দুনিয়াতে আগমন 
করেন এবং এ মাসেই তিনি বিশ্ববাসিকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে মহান আল্লাহর সানিধ্যে চলে যানন।


এ মাসের বার তারিখকে ফাতেহায়ে দোয়াজ দাহম বলে।দোয়াজ দাহম অর্থ দোয়া বা সওয়াব রেসানী।সারা দুনিয়ার মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনে নফল ইবাদত , তাসবীহ,তাহলীল,কোরআন খতম ও দরুদ শরীফ পাঠ করে তার সওয়াব নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র রুহু মোবারকের ওপর বখসিশ করে থাকে।
শুধু মাত্র বার তারিখেই নয় বরং এ মাসের যে কোন দিনের নফল ইবাদতই মূল্যবান। তাই সম্পূর্ণ রবিউল আওয়াল মাসে নফল ইবাদত করা প্রয়োজন।

রবিউল আওয়াল মাসের নফল নামায

তাযকিরাতুল আওরাদ নামক কিতাবে বর্নিত আছে যে,রবিউল আওয়াল মাসের প্রথম তারিখে মাগরিব এবং এশার নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে যারা নিচের নিয়মে ষোল রাকআত নফল নামায আদায় করে ,আল্লাহর রহমতে নিশ্চয় স্বপ্ন যোগে রাসূল ( স ) এর সাক্ষাত নসিব হবে।

নামায আদায়ের নিয়ম হলঃ

দুই দুই রাকআত করে নিয়ত করে এ নামায আদায় করতে হবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে তিন বার করে সূরা এখলাস পাঠ করতে হবে। নামায শেষ করে জায়নামাযে বসা অবস্থায় এক হাজার বার দরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

যদি প্রথম দিন স্বপ্ন যোগে রাসূল ( সাঃ ) এর সাক্ষাত না হয়,তবে তারপরের দিনও একই রুপ আমল করতে হবে।যদি দ্বিতীয় দিনও স্বপ্নে রাসূল ( সাঃ ) এর সাক্ষাত না হয়, তবুও আমল বন্ধ না করে আমল চালিয়ে যেতে হবে। নিরাশ হওয়ার কারন নেই। ইনশা আল্লাহ বার দিনের মধ্যে উদ্দেশ্য সফল হবে।

যে ব্যক্তি স্বপ্ন যোগে রাসূল ( সাঃ ) এর সাক্ষাত লাভ করে,পরকালে তার বেহেশত নছীব সুনিশ্চিত। এটা স্বয়ং রাসূল ( সাঃ ) এর নিজের প্রতিশ্রুতি।

তবে দরুদ শরীফ পবিত্র অবস্থায় পাঠ করতে হবে। শোয়ার বিছানা পত্র পাক পবিত্র হতে হবে। যে দরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে তাহলঃ

উচ্চারনঃআল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া রহমাতিল্লাহি ওয়া বারাকাতিহি।

অন্য এক বর্ণনাতে পাওয়া যায় কোন কোন কিতাবে এমন উল্লেখ আছে যে ,রবিউল আউয়াল মাসে নিচের দরুদ শরীফ দ্বয়ের যে কোন একটি সোয়ালাখ বার পাঠ করলে অবশ্যই স্বপ্ন যোগে রাসূল ( সাঃ ) এর সাথে সাক্ষাত হবে।

প্রথম দরুদ শরীফঃ

উচ্চারন: আছছালাতু ওয়াসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লা।

দ্বিতীয় দরুদ শরীফঃ

উচ্চারন: ছাল্লাল্লাহু আলা মুহাম্মাদ,ছাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম।

বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনাতে পাওয়া যায় যে,রবিউল আউয়ালের বার তারিখ অর্থাৎ রাসূল ( সাঃ ) এর জন্ম দিনে তাবেয়ীগণ রাসূল ( সাঃ ) এর রুহ মোবরকের উপর ছাওয়াব রেসানীর জন্য বিশ রাকআত নফল নামায আদায় করতেন ।

নামাজ আদায়ের নিয়ম ছিল,প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে এগার বার সূরা এখলাস পাঠ করতেন। এক বুযুর্গ তাবেয়ীদের অনুরুপ নামায পাঠের বরকতে রাসূল ( সাঃ ) কে স্বপ্ন যোগে দেখে ছিলেন।

রবিউল আউয়াল মাসের নফল রোজা

রবিউল আউয়াল মাসের রোজা বলতে বিশেষ কোন রোজা নেই। তবে প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩,১৪,ও১৫ তারিখে রোজা রাখা সুন্নত এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। কারন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) কে প্রতি মাসের এ তারিখ গুলোতে রোজা রাখতে দেখা যেতো। তাই রবিউল আওয়াল মাসে ১৩,১৪,১৫ তারিখে রোজা রাখতে পারেন,এতে কোন সমস্যা নেই।

শেষকথা

রবিউল আউয়াল মাস অন্যান্য মাসের থেকে অধিক গুরুত্ব বহন করে। কেননা এই মাসের ১২ তারিখে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু জন্মগ্রহণ করেন আবার এই মাসের ১২ তারিখেই তিনি মৃত্যু বরন করেন।তাই দেখা যায় সারা মুসলিম বিশ্ব প্রতি বছর ১২ রবিউল আউয়াল ঈদ-ই মিলাদুন্নবী বা সিরাতুন্নবী বিভিন্ন নফল ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করে। এই আর্টিকেলে রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ সম্পর্কে আংশিক ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি রবিউল আউয়াল মাসের ইবাদাতের বিবরণ সম্পর্কে আপনারা কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url