হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার-হার্ট ভালো রাখার উপায়
হার্ট শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। হার্টের জন্য এমন কিছু ক্ষতিকর খাবার রয়েছে যা আমরা অনেকেই অজান্তে খেয়ে চলেছি। হার্টের জন্য কোন খাবার গুলো ক্ষতিকর আপনি যদি না জেনে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের আর্টিকেলে হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার-হার্ট ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার-হার্ট ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে। সুতরাং আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল।
ভূমিকা
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কিছু খাবার আমাদের অবশ্যই বর্জন করা উচিত। এই হার্টের রোগ বিভিন্ন বয়সের মানুষের হতে পারে। বর্তমানে দেখা যায় মানুষের মধ্যে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন মানুষের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যায় তখনই হার্ট অ্যাটাক,হার্ট ব্লক সহ হার্টের নানা সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
তবে খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানো সম্ভব।এজন্য কোলেস্টেরল কম আছে এমন খাবার আমাদের গ্রহণ করা উচিত। তবে স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন,নিয়মিত শরীরচর্চার এবং পরিমিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে আমরা সহজে হার্ট ভালো রাখতে পারি।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হৃদপিণ্ড বা হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো রক্ত সঞ্চালনকে ব্যাহত করে এবং জটিল শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার নিম্নে বর্ণিত হলো:
সাদা চাল ও সাদা আটা
সাদা চাল ও সাদা আটাতে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি থাকে। এই কার্বোহাইড্রেট রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এই গ্লুকোজ হার্টের রক্ত নালী দুর্বল ও ব্লক করে ফেলে। তাই সাদা আটার তৈরি বিভিন্ন খাবার এবং সাদা চাল কম খাওয়া উচিত।
লাল মাংস
একেবারেই লাল মাংস খাওয়া যাবে না এ কথাটা সত্য নয়। তবে অধিক পরিমাণ লাল মাংস খাওয়া পরিহার করতে হবে। যেমন: গরুর মাংস,মহিষের মাংস,খাসির মাংস,ভেড়ার মাংস প্রভৃতি। কারণ এই লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট থাকে। আর এই ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে তোলে।
রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ার দরুন রক্তনালী সংকুচিত হয়ে পড়ে এবং রক্ত প্রবাহ বাধা প্রাপ্ত হয়। যার দরুন হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ব্লকসহ হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে একদিনে ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম এর বেশি লাল মাংস কখনোই খাওয়া উচিত না।
লবণ
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার গুলোর মধ্যে লবণ অন্যতম। কারণ অত্যাধিক লবণ খেলে রক্তনালী গুলো ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত লবণ খেলে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। উচ্চ রক্তচাপ হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই প্রতিদিন ১ চা চামচের বেশি কাঁচা লবণ খাওয়া উচিত নয়।
ফাস্টফুড
ফাস্টফুড হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ ফাস্টফুডে প্রচুর পরিমাণ চিনি, লবণ, স্যাচুুরেটেড ফ্যাট, উচ্চ ক্যালরি প্রভৃতি থাকে। ফাস্টফুডের এই উপাদান গুলো হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং হার্ট ভালো রাখতে এই খাদ্যগুলো পরিহার করা অতি জরুরী।
কোমল পানীয়
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার গুলোর মধ্যে কোমল পানীয় অন্যতম। এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ১২ আউন্স সোডা জাতীয় এই কোমল পানিতে প্রায় ১০ চা চামচ চিনি পাওয়া গেছে। এই কোমলপানীয় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।এছাড়াও শরীরের নানান ক্ষতিসাধন করে থাকে।
ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুমে আছে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল। একটি ডিমের কুসুমে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে।একজন হৃদ রোগীর জন্য দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ করা উচিত নয়। তাই হার্ট ভালো রাখতে অধিক পরিমাণ ডিমের কুসুম খাওয়া পরিহার করতে হবে। সুতরাং হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হিসেবে ডিমের কুসুম কে বিবেচনা করা হয়। তবে যারা হার্টের রোগী তারা নির্দ্বিধায় ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।
অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হিসেবে ধরা হয় অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার। অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার লিভার সহ হার্টের নানান রকম সমস্যা সৃষ্টি করে। চিকিৎসকরাহ সবসময় অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার পরিহার করার নির্দেশ দেন। সুতরাং হার্ট ভালো রাখতে চাইলে অবশ্যই অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত।
ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবারে ক্ষতিকারক ফ্যাট বেশি থাকে। যেকোনো খাবার অতিরিক্ত ভাজার কারণে তার খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং নষ্ট হয় ক্যালরি। আবার অধিক তৈলাক্ত যুক্ত খাবার রক্তের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে তোলে।যার কারণে রক্তনালীর গায়ে চর্বি জমে যায় এবং হার্টের রক্তনালী শুরু হয়ে যায়। আর এই সরু নালিতে রক্ত জমাট বাধার কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে।
কলিজা,মগজ এবং হাড়ের মজ্জা
কলিজা,মগজ এবং হাড়ের মজ্জা অধিক পুষ্টিকর খাবার। এগুলো শরীরের নানা উপকার সাধন করে থাকে। কিন্তু যারা হার্টের রোগী তাদের জন্য এই খাবারগুলো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এই অংশগুলোতে বেশি পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে।
আরো পড়ুন: হার্টের ব্লক দূর করার খাবার
আর যারা হৃদরোগে আক্রান্ত এখনো হননি তারা অবশ্যই দিনে কতটুকু এই ধরনের খাবার খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সুতরাং কলিজা,মগজ এবং হাড়ের মজ্জা হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মাছের মাথা ও মাছের ডিম
মাছের মাথা ও মাছের ডিম অধিক পুষ্টিকর হলেও হার্টের জন্য অনেক ক্ষতিকর। যাদের হৃদ রোগের আক্রান্ত হবার ঝুঁকি রয়েছে তারা অবশ্যই এই খাবার বর্জন করবেন। বিশেষ করে যারা অধিক মাত্রায় এই খাবার খেয়ে থাকেন তাদেরও বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।
কারণ আপনার খাবারের পরিমাণের দিকে আপনার খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী।রক্তের লিপিড প্রোফাইল বাড়িয়ে দেয় যে উপাদান গুলো সেই LDL বা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের উৎস হচ্ছে মাছের মাথা ও মাছের ডিম।
চিংড়ি মাছ
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হিসেবে চিহ্নিত করা হয় চিংড়ি মাছকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে চিংড়িতে ক্যালরি এবং ফ্যাট কম থাকলেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কোলেস্টেরল। অন্যান্য মাছের তুলনায় চিংড়ি মাছে অধিক পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে।
যা হার্টের রোগীর জন্য অনেক ক্ষতিকর। তবে হার্টের রোগীর জন্য ছোট মাছ অনেক উপকারী। কারণ ছোট মাছে কোলেস্টেরলের পরিমাণ একদমই নেই। সুতরাং হার্টের রোগীরা নিশ্চিন্তে ছোট মাছ খেতে পারেন।
প্রক্রিয়াজাত মাছ ও মাংস
যে কোন প্রক্রিয়াজাত খাবারই হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্রক্রিয়াজাত করা খাবারে বিভিন্ন ধরনের লবণ ও চিনি অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও দেখা যায় প্রক্রিয়াজাত করা মাছ ও মাংস বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
নারিকেল
নারিকেলের পুষ্টিগুণ অধিক। বিশেষ করে যারা থাইরয়েড হরমোনের সমস্যায় আক্রান্ত তাদের জন্য নারিকেল খুব ভালো। কিন্তু আপনি যদি আপনার খাবারের পরিমাণের দিকে খেয়াল না রাখেন তাহলে অনেক ভালো খাবারই আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।নারকেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট যা হৃদ রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
দেখা যায় নারিকেলে প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ ভাগই হলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।তাই হার্টের রোগীরা নারকেল খেতে পারেন তবে সীমিত পরিমাণে। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত বাজারের প্যাকেটজাত বা টিন জাত নারকেল তেল খাওয়া ক্ষতিকর।
বাড়িতে নারকেলের দুধে তৈরি তেল ব্যবহার করুন অল্প পরিমাণে এতে ক্ষতি হবার আশঙ্কা কম। আর যারা কাঁচা নারকেল বা শুকনো নারকেল খেতে চান তারা একদিনে ৫০ গ্রামের বেশি নারিকেল কখনো খাবেন না।
চিনি জাতীয় খাবার
চিনি জাতীয় যেকোনো খাবার হার্ট অ্যাটাক এর সম্ভাবনা অনেক গুণ বাড়িয়ে তোলে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে চিনি জাতীয় যে কোন খাবারই লিভারের তৎপরতাকে বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে রক্তে ক্ষতিকর ফ্যাট নিঃসারণ ঘটে। এ কারণে দেখা যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই চিনি জাতীয় যে কোন খাবার যেমন: কেক, পেস্ট্রি,পুডিং,আইসক্রিম প্রভৃতি পরিহার করা উচিত।
ঘি, মাখন,ডালডা ও পরিশোধিত তেল
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হিসেবে ঘি,মাখন,ডালডা ও পরিশোধিত তেলকে বিবেচনা করা হয়। আপনি যদি ইতোমধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে এইসব খাবার অত্যাধিক খাওয়া পরিহার করুন। এছাড়াও পরিশোধিত তেল বলতে সাদা তেল বা সয়াবিন তেল আমরা খেয়ে থাকি। এইসব তেলে উচ্চমাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।
আমাদের খাবারে যদি এই তেলের পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে দেখা যায় হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক গুণ বেড়ে যায়। তবে আমরা যদি অল্প পরিমানে খাঁটি সরিষার তেল,অলিভ অয়েল বা বাদাম তেল খেয়ে থাকি,তাহলে হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার হিসেবে তালিকায় রয়েছে ধূমপান ও অ্যালকোহল। সিগারেটের ধোঁয়ায় যে নিকোটিন থাকে তা হিরোইন অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। ধূমপানের কারণে হার্টের সমস্যার পাশাপাশি শরীরে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়। কারণ সিগারেটের ধোঁয়ায় যে নিকোটিন থাকে এই নিকোটিন রক্তের সঙ্গে মিশে যায়।
আরো পড়ুন: কিডনি ভালো রাখার উপায় কি জেনে নিন
যার ফলে হার্টের ব্লক,হার্ট অ্যাটাকসহ বিভিন্ন ধরনের হার্টের রোগের সৃষ্টি হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা অ্যালকোহল সেবন করে তাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, হাই ব্লাডপ্রেসার,হার্ট স্ট্রোক রোগের সম্ভাবনা অনেক বেশি। সুতরাং হার্ট ভালো রাখতে চাইলে অবশ্যই অ্যালকোহল পরিহার করা উচিত।
হার্ট ভালো রাখার উপায়
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার গুলো বর্জন করলেই হবে না কিছু নিয়ম কানুন ও সতর্কতা রয়েছে যা অবশ্যই মেনে চলতে হবে। তাহলে অবশ্যই হার্ট ভালো রাখা সম্ভব। হার্ট ভালো রাখতে নিম্নে কিছু সতর্কতা ও নির্দেশনা বর্ণিত হল:
- প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ঘাম ঝরানো ব্যায়াম করতে হবে। চিকিৎসকদের মতে ব্যায়াম হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হব। চিকিৎসকরাহ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হার্ট নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
- উচ্চ রক্তচাপ অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষের হার্ট নষ্ট হতে দেখা যায়।
- হার্টের রোগীদের অধিক পরিশ্রমিক ব্যায়াম করা যাবে না। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
- হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার শুধুমাত্র বর্জন করলেই হবে না। হার্ট ভালো রাখতে হলে অবশ্যই রক্তে HDL এর মাত্রা বাড়াতে হবে।
- প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পরিমাণ ঘুমাতে হবে। কারণ ঘুমের মাধ্যমে হার্ট বিশ্রাম পায়,এতে হার্ট ভালো থাকে।
- ম্যাগনেসিয়াম ও বেকিং সোডা জাতীয় খাবার মাঝে মাঝে গ্রহণ করতে হবে। এই খাবার হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাওয়া অতি জরুরী। কারণ এতে হার্ট অনেক ভালো থাকে।
- হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। কারণ অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে হাসিখুশি থাকলে হার্ট ভালো থাকে।
- ইনফ্লামেশন দূর করতে হবে। কারণ ইনফ্লামেশন হার্টের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল অর্থাৎ নেশা জাতীয় যেকোনো দ্রব্য পরিহার করতে হবে। কারণ নেশা জাতীয় খাবার হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
- পরিমিত পরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া অবশ্যই পরিহার করতে হবে।কারণ এটা হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- হার্ট ভালো রাখার উপায় হিসেবে ইনসুলিনের মাত্রা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা অধিক বেড়ে গেলে হার্টের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়।
- ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। সূর্যের আলো থেকে শরীরের ৮০ ভাগ ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। বাকি ২০ ভাগ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের খাদ্য থেকে।
- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। কারণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল LDL কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্টের সুস্থতা বজায় থাকে।
- হার্ট ভালো রাখতে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। সবুজ শাক, কমলা ও হলুদ রঙের সবজি, কলা, পেয়ারা,পেস্তা বাদাম,ধনেপাতা,গম,জোয়ার, রাজমা প্রভৃতি খাওয়া উচিত। এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হার্ট ভালো রাখতে হলে প্রতিদিন শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। এই ব্যায়াম হৃদ সংকোচন সংক্রান্ত চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।
- হার্ট ভালো রাখার উপায় হিসেবে কিছুটা সময় খোলা আলো বাতাসে থাকার চেষ্টা করুন। কারণ এতে খুব সহজেই সূর্যের আলো থেকে শরীরের ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ গাঢ়সবুজ ও কমলা রঙের শাক সবজি খেতে হবে। কারণ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হার্টের জন্য অনেক উপকারী।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অত্যাধিক ওজন বেড়ে গেলে হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অত্যধিক ওজনের কারণে হার্ট অ্যাটাক,হার্ট ব্লক সহ নানা ধরনের হার্টের রোগের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
- অতিরিক্ত ঘুম পরিহার করা উচিত। ৮ থেকে ৯ ঘন্টার বেশি পরিমাণ ঘুমালে শরীরের ফ্যাট জমে স্থূলতার প্রবণতা বেড়ে যায় যা হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার বর্জন করার পাশাপাশি যদি আমরা উপরোক্ত নিয়ম-কানুন ও সতর্কতা মেনে চলি তাহলে অবশ্যই আমাদের হার্ট ভালো রাখার সম্ভব।
শেষ কথা: হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার-হার্ট ভালো রাখার উপায়
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে হার্টের জন্য যেসব খাবার ক্ষতিকর সেগুলো প্রত্যেকটা মানুষকেই বর্জন করা উচিত। কারণ হার্ট আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। হার্টের সমস্যা হলে শরীরের প্রায় সবকিছুই ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। তাই প্রত্যেকটি মানুষের উচিত হার্ট ভালো থাকতেই আগেই খাবারের প্রতি সচেতন হওয়া। আজকের আর্টিকেলে হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার-হার্ট ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।