হার্টের ব্লক দূর করার খাবার

প্রিয় পাঠক আপনারা কি হার্টের ব্লগ দূর করে হার্টকে সুস্থ রাখতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।কারণ আজকের আর্টিকেলে হার্টের ব্লক দূর করার খাবার,হার্ট ব্লক কি, হার্ট ব্লকের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।

হার্টের ব্লক দূর করার খাবার

আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন হার্টের ব্লক দূর করার খাবার, হার্ট ব্লক কি, হার্ট ব্লকের লক্ষণ সম্পর্কে। তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল।

ভূমিকা

হার্ট বা হৃদপিণ্ড শরীরের সর্বত্র রক্ত সরবরাহ করে। এই প্রবাহিত রক্তের কাজ শরীরের সর্বত্র পুষ্টির যোগান নিশ্চিত করা। তবে হার্ট বা হৃদপিন্ডের নিজেরও পুষ্টির প্রয়োজন আছে। আর এ পুষ্টি আসে তিনটা ধমনীর মাধ্যমে। আর কোন কারণে এইসব ধমনী যদি শুরু হয়ে যায় বা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হার্ট ব্লক হয়েছে এই ধরনের শব্দ আমরা ব্যবহার করি।


সাধারণত ধমনীর গায়ে চর্বি জমে গেলে তা ক্রমান্বয়ে শুরু হতে থাকে। এটা যদি শতকরা ৫০ ভাগের বেশি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে হৃদপিন্ডের রক্ত প্রবাহ অনেক কমে যেতে থাকে এবং রোগীর সামান্য পরিশ্রমে বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারে। আর এইসব কারণে হার্ট অ্যাটাক হয় যা রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

হার্ট ব্লক কি

হার্ট ব্লক মূলত দুই ভাবে হয়।
১|হার্টের রক্তনালির ব্লক যখন পরিপূর্ণ হয় তখন ওই রক্তনালী দিয়ে রক্ত যেতে পারে না বিধায় আমাদের হার্টের মাংসপেশি ড্যামেজ হয়। আর এ প্রক্রিয়াকে হার্ট অ্যাটাক বা হার্ট ব্লক বলা হয়ে থাকে। এই রোগে ২০% থেকে ৩০% মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায়। সহজ কথায় হার্ট ব্লক বলতে বোঝায় হার্টের রক্ত নালীর রক্ত চলাচল যখন বন্ধ হয়ে যায় বা রক্ত চলাচল বাধা প্রাপ্ত হয়। আর প্রক্রিয়াকে হার্ট ব্লক বলে।

২|হার্টের জন্মগত গতি নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে তাকে বলা হয় অ্যারিদমিয়া। এই জন্মগত ব্লকের ফলে হার্টবিট অতি দ্রুত আবার খুব ধীর গতিতে চলতে দেখা যায়।

হার্ট ব্লকের লক্ষণ

হার্ট যদি ব্লক হয়ে যায় তবে এর কিছু লক্ষণ প্রকাশিত পায় যেমন:
  • শ্বাসকষ্ট হওয়া
  • দ্রুত হাঁপিয়ে যাওয়া
  • কর্মক্ষম হয়ে পড়া
  • মাথা ঘুরা ও বমি বমি লাগা
  • অত্যাধিক ঘেমে যাওয়া
  • মাঝে মাঝে বুকে ব্যথা হওয়া
  • হাঁটার সময় ব্যাথা বেড়ে যাওয়া
  • মাঝে মাঝে পিঠে ব্যথা হওয়া
  • ভারী কিছু নিয়ে হাঁটলে বুকে অস্বস্তি লাগা
এইসব লক্ষণ দেখা দিলেই সতর্ক হয়ে যাওয়া এবং দ্রুত চিকিৎসকের নিকটবর্তী হওয়া উচিত।

হার্টের ব্লক দূর করার খাবার

এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো নিয়মিত সেবনে হার্টের ব্লক দূর হয়ে যায়। হার্টের ব্লক দূর করার খাবার নিম্নে বর্ণিত হলো:

তৈলাক্ত মাছ

তৈলাক্ত মাছ হার্টের ব্লক দূর করতে দারুন কার্যকরী। কারণ তৈলাক্ত মাছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি পাওয়া যায় যেমন: স্যালমন, টুনা,লইটা, ভেটকি,ছুরি,ইলিশ প্রভৃতি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল LDL কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়।


এছাড়াও এই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। ফলে হার্টের সুস্থতা বজায় থাকে। হার্টকে সুস্থ রাখতে এবং হার্টের ব্লক দূর করতে চাইলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন তৈলাক্ত যুক্ত মাছ খাওয়া উচিত।

ডালিম

হার্টের ব্লক দূর করতে ডালিম অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। ডালিমে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার,প্রোটিন, ভিটামিন সি,ভিটামিন কে এবং ফোলেট যা আপনাকে কখনো হৃদরোগে আক্রান্ত হতে দেবে না। ডালিম রক্তের LDL এর মাত্রা কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

হার্টের ব্লকে আক্রান্ত রোগীরা প্রতিদিন অন্তত ৫০ থেকে ৬০ গ্রাম করে ডালিম খাওয়ার চেষ্টা করুন। এছাড়াও ডালিম প্রস্রাবের ইনফেকশন প্রতিরোধ করে,রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।

আপেল

হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে আপেল অত্যন্ত কার্যকরী। চিকিৎসকরাহ হার্টের রোগীদের প্রতিদিন অন্তত ১ টি করে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ১ টি করে আপেল খেলে রক্তনালীর ব্লক হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪০% কমে যায়। কারণ আপেল রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো কোলেস্টেরল তৈরি করে।

কলা

কলা হার্টের রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কলাতে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান।কলাতে থাকা উচ্চ পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।এছাড়াও কলাতে থাকা ফাইবার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দিতে সাহায্য করে।কলা ধমনীর রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং ধমনীর প্রাচীরে চর্বি জমতে দেয় না।


এতে করে কোন ধরনের হার্ট ব্লক হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।এজন্য হার্টের ব্লক রোগীরা প্রতিদিন ১ টি থেকে ২ টি করে পাঁকা কলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন বয়স, ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী। তবে কলা সব সময় সকালে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। নাস্তা করার ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পরে পাঁকা কলা খেলে আপনি সারাদিনের জন্য এনার্জি পাবেন।

পেয়ারা

পেয়ারা নানা পুষ্টি উপাদানের ভরপুর যা হার্টের রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল হিসেবে পরিচিত। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেয়ারাতে সবচেয়ে বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। আর এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হার্টের ব্লক দূর করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। সুতরাং হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসাবে পেয়ারা অন্যতম। হার্টের রোগীরা সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ টি করে পেয়ারা খাওয়ার চেষ্টা করুন।

তরমুজ

হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে অন্যতম ফল তরমুজ। তরমুজে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকায় আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও তরমুজ হার্টের জন্য অনেক ভালো।এটি আমাদের রক্তবাহী ধমনীকে নমনীয় ও শীতল রাখে।তরমুজ স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ডাবের পানি

ডাবের পানি পটাশিয়ামের দারুন উৎস। ডাবের পানিতে অধিক পরিমাণ পটাশিয়াম থাকার কারণে এটা শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। ডাবের পানি শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং রক্তনালিতে চর্বি জমতে দেয় না।

সুতরাং ডাবের পানি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। তাই হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে আপনারা ডাবের পানিকে বেছে নিতে পারেন। তবে বেলা ১২ টার মধ্যে ডাবের পানি খাওয়া চেষ্টা করবেন। এছাড়াও ডাবের পানি খেলে ইউরিনের সমস্যা দূর হয়।

গ্রিন টি

গ্রিন টি নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা শরীরের সুস্থতা ধরে রাখার পাশাপাশি হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে। গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, এনজাইম,অ্যামিনো অ্যসিড,ভিটামিন বি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স প্রভৃতি। সুতরাং হার্টকে সুস্থ রাখতে চাইলে চা, কফির পরিবর্তে গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

কমলালেবু

মজাদার ফল কমলার কোয়ায় কোয়ায় রয়েছে ভিটামিন। কমলা তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম,ফসফরাস প্রভৃতি। কমলাতে থাকা এইসব পুষ্টি উপাদান হৃদরোগ জনিত সকল সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কমলালেবু শীতকালের ঠান্ডা,জ্বর,সর্দি,কাশি, জনিত সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

পাতি লেবুর রস

হার্টের ব্লক খুলতে পাতি লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী। কারণ এতে রয়েছে ৬ ভাগ সাইট্রিক অ্যাসিড, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি,আইরন,ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম ফসফরাস,জিংক, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন প্রভৃতি।


লেবুতে থাকা উচ্চ পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। এছাড়াও লেবুতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রক্ত নালীতে চর্বি জমতে দেয় না এবং রক্তনালী সমূহকে শক্তিশালী করে। সুতরাং হার্টের রোগীরা সবসময় পাতি লেবু খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

ব্রকলি

ব্রকলি মূলত শীতকালীন সবজি। এই সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম,ফোলেট, ভিটামিন সি,ভিটামিন এ,ভিটামিন কে,ফাইবার,বিটা ক্যারোটিন প্রভৃতি। ব্রকলিতে থাকা উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যর জন্য অত্যন্ত উপকারী। ব্রকলির ফাইবার উপাদান দেহের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।এছাড়াও দেহের খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

পালংশাক

পালংশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম, আয়রন,ফলিক এসিড, অক্সালিক এসিড,ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, থায়ামিন প্রভৃতি। পালংশাক শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং ধমনীর প্রাচীরে কখনো চর্বি জমতে দেয় না। এ কারণে দেখা যায় যারা নিয়মিত পালংশাক খায় তাদের হার্টের ব্লকের কোন সমস্যা থাকে না। তবে যাদের শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেশি তারা পালংশাক খাবেন না।

লাউ

হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে আমরা লাউকে বেছে নিতে পারি। কারণ লাউ নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করে। লাউয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি,ভিটামিন সি,শর্করা ও খাদ্য শক্তি। লাউ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

আলু

আমরা অনেকেই আলুকে ক্ষতিকর মনে করি। কিন্তু আলু পটাশিয়ামের দারুণ উৎস। হার্টের রোগীরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু রাখতে পারেন বয়স ওজন এবং উচ্চতা অনুযায়ী। যাদের ইতোমধ্যে হার্টের ব্লক শুরু হয়ে গেছে তারা প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম আলু খেতে পারেন। তবে আলু সবসময় সেদ্ধ করে খাওয়ায় ভালো। অতিরিক্ত ফ্রাই করে খেলে আলুর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে আমরা আলুকে বেছে নিতে পারি।

আদা

আদা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। আদা খেলে হার্টের রক্ত জমাট বাঁধে না ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে এবং সারা শরীরে রক্ত চলাচল সচল থাকে।

কাঁচা রসুন

হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে রসুন অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মসলা। কাঁচা রসুন শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। কাঁচা রসুন খেলে রক্তনালিতে চর্বি বা খারাপ কোলেস্টেরল জমবে না যার ফলে আপনার হার্ট ব্লক বা হার্ট অ্যাটাকের মত সমস্যা হবে না।

হার্ট ব্লকের রোগীরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত ২ কোয়া করে কাঁচা রসুন খাওয়ার চেষ্টা করুন। তবে কাঁচা রসুন কখনোই অধিক পরিমাণ খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও কাঁচা রসুন শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।

হলুদ

হলুদকে বলা হয় প্রাকৃতিক প্রতিরোধক উপাদান। হলুদে প্রচুর পরিমাণ কারকিউমিন থাকে। আর এই কারকিউমিন রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং হার্টের ব্লক দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও হলুদের রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন,ভিটামিন,খনিজ লবণ, ফসফরাস,ক্যালসিয়াম,লোহা প্রভৃতি। এইসব পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

দারুচিনি

দারুচিনিতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়াও দারুচিনি শরীরের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের উন্নতিতে কাজ করে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ১ চা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো খেলে দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমে এবং রক্তনালীতে প্লাক জমে ব্লক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

তিসি বীজ

তিসি বীজ বা ফ্ল্যাক্সসিড নানা রকম পুষ্টি উপাদানে ভরপুর।এজন্য বর্তমানে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা একে সুপারফুড নামে অভিহিত করেন। তিসি বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আলফা- লিনোলেনিক অ্যাসিড যা উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং রক্তনালীর প্রদাহকে দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও রক্তনালীর সুস্থতা নিশ্চিত করে।

তবে তিসি বীজ কখনো কাঁচা খাওয়া যাবে না। এই বীজটি হালকা তাপে ভেজে নিয়ে গুড়া করে নিলে ভালো হয়। হার্টের রোগীরা হার্টের ব্লগ দূর করার খাবার হিসেবে তিসি বীজ সেবন করতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় প্রতিদিন সকালে ১ থেকে ২ চা চামচ তিসির গুড়া হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে।

চিয়া বীজ

বর্তমান সময়ে চিয়া সিড বা চিয়া বীজ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। সব ধরনের পুষ্টিগুণ উপস্থিত থাকার কারণে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা চীয়া বীজকে সুপারফুড নামে অভিহিত করেন। চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে চিয়া বীজে স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। চিয়া বীজে কলার চেয়েও দ্বিগুণ পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে বলে এটা শরীরের স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখে। এছাড়াও স্নায়ু ও পেশির কর্মক্ষমতা সঠিক রাখতে এবং কোষের পুষ্টি পরিবহন করতে সহায়তা করে।

সুতরাং হার্টের রোগীরা হার্টের ব্লক দূর করার খাবার হিসেবে চিয়া বীজকে বেছে নিতে পারেন। তবে প্রতিদিন ১ থেকে ২ চা চামচের বেশি চিয়া বীজ খাওয়া উচিত না। চিয়া বীজ খাওয়া সঠিক নিয়ম হলো এটা কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট কুসুম গরম পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে খেতে হবে, তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

হার্টের রোগীরা হার্টের ব্লক দূর করতে চাইলে উপরোক্ত খাবার গুলোর মধ্যে থেকে প্রতিদিন ২ টি বা ৩ টি খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

শেষ কথা: হার্টের ব্লক দূর করার খাবার

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে হার্টের রোগীরা যদি নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন, নিয়মিত শরীর চর্চা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলেন তাহলে হার্টের রোগ নিয়েও দীর্ঘ সময় স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব। আজকের আর্টিকেলে হার্টের ব্লক দূর করার খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url