চোখের বিভিন্ন রোগ-চোখের রোগের কারণ-লক্ষণ ও প্রতিকার

 চোখ শরীরের অত্যান্ত স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল একটি অঙ্গ।আপনি কি জানেন এই চোখের বিভিন্ন রোগ এর কারণ কি? এবং এই রোগের থেকে বাঁচতে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাই আজকের আর্টিকেলে চোখের বিভিন্ন রোগ-চোখের রোগের কারণ-লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে তুলে ধরা হলো। আপনারা কিভাবে চোখকে রোগমুক্ত ও সুরক্ষিত রাখবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হল।

চোখের বিভিন্ন রোগ- রোগের কারন-লক্ষন ও প্রতিকার

চোখের বিভিন্ন রোগ-চোখের রোগের কারণ-লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হলো।চোখকে রোগমুক্ত এবং সুরক্ষিত রাখতে হলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল।

ভূমিকা

মানুষের শরীলে চোখ সবচেয়ে মুল্যবান সম্পদ গুলির মধ্যে একটি। পৃথিবীতে যাদের চোখ নেই শুধু মাত্র তারাই বুঝতে পারে এর কষ্ট কতোটা। চোখের কারনে আমরা আমাদের চারপাশ দেখতে পাই এবং একটি সুন্দর জীবন উপভোগ করতে পারি। এ জন্য আমাদের নিয়মিত চোখের যত্ন নিতে হবে। যে কোন ধরনের চোখের ব্যাধি বড় অসুবিধার কারন হতে পারে। তাই চোখের অবস্থা প্রাথমিক ভাবে নির্নয়ের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি।

চোখের বিভিন্ন রোগ

চোখের বিভিন্ন সমস্যাকে একত্রে চোখের রোগ বলে। চোখের বিভিন্ন রোগ নানা কারণে হয়ে থাকে।চোখের বিভিন্ন রোগ সাধারণত তুলে ধরা হলঃ
  • গ্লূকোমা,
  • ম্যাকুলার,
  • কংজাংটিভাইটিস,
  • চোখের শুষ্কতা,
  • ডায়বেটিক রেটিনার ক্ষয়,
  • ডিজেনারেশন,
  • দৃষ্টি শক্তির দুর্বলতা,
  • দৃষ্টি শক্তি চলে যাওয়া,
  • ট্যারা চোখ,
  • অলস চোখ,
  • দৃষ্টিভঙ্গি,
  • রেটিনার বিচুযতি,
  • স্কুইন্ট,
  • ইউভাইটিস,
  • ছানি,
  • আঘাত মূলক ছানি,
  • অ্যাম্বলিওপিয়া,
  • ম্যাকুলার এডিমা, প্রভৃতি ছাড়াও চোখের বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে।

চোখের রোগের কারণ

চোখের রোগের কারণ মূলত অনেক।চোখের রোগের কারণ গুলো যথাক্রমে দেওয়া হলঃ
  • চোখ বা চোখের কোন অংশে আঘাত লাগা,
  • চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ,
  • ভিটামিন A র অভাব,
  • বংশগত জিনের রোগ,
  • দীর্ঘদিন ধরে ওষধের ব্যবহার,
  • বয়স বৃদ্ধি হওয়া,
  • অ্যালার্জি,
  • সংক্রমনের কারনগুলি ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস ,ছত্রাক,বা প্যারাসাইটের কারনে হতে পারে,
  • বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমনঃ হাইপার টেনশন,ডাইবেটিস, হাই ব্লাড প্রেসার,থাইরয়েড রোগের কারণ,এবং রোগ প্রতিরোধক অবস্থা যেমনঃ অর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড,সজোগ্রেনস সিনড্রোম এর কারনে চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে,

চোখের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ

চোখ রোগে আক্রান্ত কিনা সেটা নিম্ন লিখিত লক্ষণ এবং উপসর্গ গুলি দেখে বোঝা যায়ঃ
  • চোখ করকর করা এবং অস্বস্তি,
  • চোখের মধ্যে এবং চারপাশে ব্যাথা,
  • চোখের চূলকানি ,পুজপড়া ও চোখ দিয়ে জল বের হওয়া,
  • চোখ লাল হওয়া ও ফুলে ওঠা,
  • দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া,
  • আলোতে সংবেদনশীলতা হওয়া,
  • ঝাপসা,অস্পষ্টতা এবং দুটো করে দেখা,
  • চোখের তারার রঙিন অংশের রঙের পরিবর্তন হওয়া,
  • দৃষ্টিশক্তি হারানো,
  • চোখ বন্ধের সময় পর্দা সংবেদনশীল হওয়া,
  • মাথা যন্ত্রনাকরা ও দাগযুক্ত দৃষ্টির উপস্থিতি যেটা খুব অস্তিকর মনে হয়,
  • চোখ জ্বালা করা,
  • চোখের পাতায় ময়লা জমা হওয়া,
  • চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া।
  • উপরোক্ত লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

চোখের রোগের চিকিৎসা বা প্রতিকার

চোখের রোগ ভালোভাবে চিকিৎসা করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চোখ ভালো হতে দেখা যায়। এ জন্য প্রয়োজন বছরে অন্তত্ব একবার ডাক্তারের কাছে যেয়ে চোখ পরীক্ষা করানো। চোখের রোগের চিকিৎসার জন্য একজন ভালাে চিকিৎসকের নিকটে যেতে হবে। এছাড়া নিম্নলিখিত কিছু উপদেশ মেনে চলতে হবে যেমনঃ
  • ধুমপান পরিহার করতে হবে,
  • হাত দিয়ে চোখ চূলকানো যাবে না,
  • চোখের উপর অধিক পরিমান পেশার দেওয়া যাবে না,
  • চোখ মোছার জন্য আলাদা কাপর ব্যবহার করতে হবে,
  • নিয়মিত চোখের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে,
  • চোখকে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম দিতে হবে,
  • কাজের সময় নিরাপত্তা চশমা ব্যবহার করতে হবে,
  • পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করতে হবে,
  • অন্যের চশমা পড়া পরিহার করতে হবে,
  • রোদ চশমা ব্যবহার করতে হবে,
  • রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।
  • উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিকার করা অনেকটা সম্ভব।

শেষ কথা

আমাদের দৃষ্টি আমাদের কাছে থাকা সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদগুলির মধ্যেএকটি। যেকোনো ধরনের চোখের ব্যাধি বড় অসুবিধার কারন হতে পারে। এজন্য আমাদের চোখের যত্ন নিতে হবে। চোখের বিভিন্ন রোগ চোখের দৃষ্টিকে প্রভাবিত করতে পারে।তাই চোখের অবস্থা প্রাথমিক ভাবে নির্নয়ের জন্য নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা জরুরী।


এটা করতে বিলম্ব হলে চোখের স্থায়ী অবস্থা এমন কি অন্ধত্ব হতে পারে। আজকের আর্টিকেলে চোখের বিভিন্ন রোগ-চোখের রোগের কারণ-লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url